Sunday, November 3, 2024

জীবনের গল্প

 



খেলাধুলা আর পড়াশুনা নিয়েই আদিলের বাল্যজীবন সীমাবদ্ধ।

প্রেম,ভালবাসা এসব বুজে ওঠার সময় কই! ছোটবেলা থেকেই প্রেম,ভালবাসার প্রতি লজ্জা-ভয় দুটাই কাজ করত।তাই ওদিকে হাত বাড়ায়নি সে।

এভাবে চলছিল অস্টম শ্রেনী অবধি।

কিন্তু ৮ম এর শেষের দিকে তার কারও উপর যেন সে দিন দিন হারিয়ে যেত লাগল।

মেয়েটি হল তার থেকে এক বছরের জুনিয়র ইলমি।

আদিলের ভাল লাগাটা হয়ত চোখের ভাষায় ইলমি বুজে গেছে।

তারা চোখের ভাষায় অনেটা পথ এগিয়ে গেছে কিন্তু মুখে দু একটা ব্যাক্যা বলার সাহস নেই আদিলের।

যেহেতু পাশাপাশি ক্লাস তাই প্রতিনিয়ত একে অপরের চোখে কথা হত।

বেশ চলছিল।যেহেতু প্রথম প্রেমের পরশ সেহেতু বলা চলে যে আদিল হাওয়ায় উড়তেছে।

কিন্তু কিভাবে বলবে সে!!!!!

আদিলের জুনিয়ার রায়হান ইলমির সাথে পড়ে & খুব ভাল বন্ধু।তো রাহহানের মাধ্যমে প্রথম প্রেমপত্র সে লিখে পাঠিয়ে দিল।ফিডব্যাক আসল।

আদিল তো খুশিতে পা মাটিতে পড়ে না।

স্কুল ছুটির সবার সামনে এসে খুলে দেখে,না বোধক উত্তর & কিঞ্চিৎ অপমান বটে।

খুব আপসেট হয়ে বাড়ি ফিরল।প্রথম ভাললাগা, প্রথম প্রেমপত্র ফলাফল শুন্য।

আপসেট হলেও আদিলের ভাললাগা দিন দিন কোষ বিভাজনের মত বাড়তে থাকল।

পরে আবার প্রেমপত্র

এইবার আবেগটা বেশি ছিল ছোকরার তাই নিজের রক্ত দিয়েই লিখে ফেলল।লিখে স্কুলের কোন একজায়গায় রাখল কিন্তু তা ওলি পোকায় খেয়ে ফেলল।আদিল আরও আপসেট। কিছু একটা করতে হবে।

তাই এইবার তার ক্লাস ফ্রেন্ড & প্রানের বন্ধু অমি কে ধরল।দোস এই ব্যাপার তুই কিছু একটা করে দে।

অমিও অনেক চেস্টায় ব্যর্থ। প্রায় বছর খানেক হয়ে গেল আদিল কিছুই বলতে পারল না।

এদিকে দিন তার লেখাপড়া বেশ অবনতি।আর স্কুলের প্রায় ছেলে মেয়ে ব্যাপার টা জেনে গেছে।

আদিল ভাবল শেষ চেস্টায় কি আছে দেখি,

আবার লিখে ফেলল চিঠি। তবে এবার আরও ভয়াবহ। চিঠি পড়ল বিজ্ঞান শিক্ষকের হাতে সে সব শিক্ষককে পড়ে শুনাইল আর আদিলের লেখ টাও চিনে ফেলল।

আদিল তো ভয়ে ফুলে উঠেছে।

যে বছরে দিন স্কুলে যায়নি সে ভয়ে এখন স্কুলের পাশেও নেই।

এভাবেই চলছি বেশ।তবে ইলমির চোখের ভাষায় কিন্তু পজিটিভ ছিল।

দিনে দিনে তার ফ্যামিলি, আদিলের ফ্যামিলি, বন্ধু মহল,শিক্ষক কেউই জানতে বাকি রইল না।

এদিকে আদিলের দিন দিন বেশ মন খারাপ করে থাকে।

যে কোন দিন সিগারেট এর প্রতি মোটেও ইচ্ছা ছিল না সে আজ অনেক সিগারেট এর প্রতি আসক্ত হলে গেল।

পড়াশোনা বেশ মন্থর। যদিও সে মোটামুটি ভাল স্টুডেন্ট ছিল।

এস এস সি পরিক্ষা এসে গেল। বিদায় দিনে একটা বই, ডায়রি তাকে দিত চাইল,নিল না।

অবশেষে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে পাড়ি জমালো শহরের দিকে,শহরের ভাল কলেজে আদিল চান্স পেল।

আর এদিকে তার ইলমিকে শুধু কল্পানায়ই ভেবে নিল।

হঠাৎ কোন একদিন তার সাথে ফোনে কথা হয়।সেটা ছিল আকাস কুসুম কল্পানা

তারপর হয়ে গেল।

এখন ইলমি প্রায় মিস কল দে। তাদের অল্প কথা হয় তবে আগের মত অনুভূতি খুজে পায় না।

তখন হয়ত ইলমি রাজি ছিল কিন্তু আদিল ভেবে দেখল যে তা কিভাবে হয়!

তার বাবা মা তাকেই নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখে।তা পুরন করার লক্ষে তাকে অনেক কিছু করতে হবে।

তাই ভেবে আদিল আর সামনে এগালো না।

সে ভাবল ইলমি মাত্ত বছরের ছোট।তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা ফলাফল অনুকূলে আসবে।

বাবা মা এর কথা ভেবে তার স্বপ্নগুলোকে মাটিচাপা দিয়ে দিল।

আর যখনই শহর ঘুমিয়ে যায় তখন নি আদিলের চোখের কোনে জাপসা হয়ে যায়।

ইলমি আজ অন্য একটা ছেলের সাথে রিলিশন করে।বেশ কাটছে হয়ত তাদের সম্পর্ক।

তবে তাতে আদিলের কি!

সময় টা বছর পেরুল।আজ আদিল খুব ভাল আছে। নতুন জব পেয়েছে।শুধু মাঝে মাঝে ইলমির কথা ভেবে চোখটা জাপসা করে ফেলে।এখন আর মেসেজ করার অধিকার নেই,তাই পূরনো মেসেজ গুলাই আদিল রিপিট করে।

ইলমি ভাল থাকুক এটাই আদিলের চাওয়া।


No comments:

Post a Comment